কবিতা
০৯.০৯.২০২০
: আমাকে পথ দেখাও গুরু। ভুল পথে চলে চলে ক্লান্ত আমি।
: যে পথ তোমাকে আমার কাছে এনেছে তাকে ভুল বলছ?
: জীবন এখানে পাণ্ডুর রোগের মত ম্রিয়মাণ, বিস্বাদ। সকল সতীর্থ সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে পৌঁছে গেছে স্বর্গের দ্বারে।
: সাফল্য আর ব্যর্থতা, স্বর্গ আর নরক এই তাহলে সাফল্যের মানদণ্ড?
: নয়?
: সাফল্য বা ব্যর্থতা বলে কিছু নেই। পথ কখনো যদি সুন্দর ফুল বাগানের মধ্য দিয়ে যায় তাকে সাফল্য আর কখনো যদি পথে আসে ঝড়ের রাত্রি, ভাঙা সেতু তাকে ব্যর্থতা বলবে কোন যুক্তিতে?
: কিন্তু ফুল বাগানের আনন্দ কি ঝড়ের রাতে পাওয়া যায়? দুই সময়ের দুই অনুভব- আনন্দ আর বেদনা এদের কি কোনো পার্থক্য নেই?
: যতবেশি তুমি আনন্দে থাকো ততবেশি তুমি বেদনার কাছাকাছি আছ। যতবেশি তুমি বেদনায় থাকো ততবেশি আনন্দের কাছাকাছি আছ। যোগ বিয়োগে মিলিয়ে নিলে দেখবে সবই সমান।
: আর স্বর্গ নরক?
: প্রত্যেকেরই নিজস্ব দুনিয়া আছে। তুমি কতটুকু পরিতৃপ্ত কিংবা অতৃপ্ত থেকে মরছ, মৃত্যুর পর সেই দুনিয়া কতটুকু ভাল বা খারাপ থাকছে তা ই মূলত স্বর্গ নরক।
: ভাল মানুষ মরলে যখন খারাপ লোকেরা উল্লসিত হয়?
: ভাল বা খারাপ বলেও কিছু নেই। প্রত্যেকেই আলাদা পথের পথিক। নিজের জন্য যে দুনিয়া সাজাচ্ছো, তা ই ঠিক করে দিচ্ছে তুমি তৃপ্তি নিয়ে মরবে নাকি অতৃপ্তি। মৃত্যুর পর তোমার দুনিয়া ভালো থাকবে নাকি খারাপ।
: এই যে এত ধর্ম, মতবাদ, ভাল খারাপের যুদ্ধ এসব কি একেবারেই অর্থহীন?
: মানুষ হত্যাকে যদি তুমি খারাপ বল আর ক্ষমাকে যদি ভাল বল তাহলে দেখ, জগতের মহান ব্যক্তিগণও প্রয়োজনে মানুষ হত্যা করেছেন। প্রয়োজনে ক্ষমাহীন হয়েছেন। অর্থাৎ যার যার প্রয়োজনই ঠিক করে দিচ্ছে কোনটি ভাল কোনটি খারাপ। সুতরাং তুমিই বল, ভাল খারাপের যুদ্ধ কি আসলেই ভাল খারাপের যুদ্ধ?
: আমি আরও পথহারা হচ্ছি। এই তর্ক আমার জন্য নয়। আমাকে পথ দেখাও গুরু।
: ভালবাসো এবং সন্তুষ্ট থাকো। মনে রেখ, সকল কর্মের যেমন ফল থাকে তেমনি বিপরীত ফলও থাকে। ফলের চেয়ে বিপরীত ফল যেন শক্তিশালী হয়ে না ওঠে।