ছোট গল্প
13.08.2016
হিজলতলির মাঠে একটা লাশ আমাকে তাড়া করছিল। ওকে ত্যাগ করা আত্মাই নাকি আমি। আমাকে হয় নিজ দেহ ত্যাগ করতে হবে নতুবা দুই দেহেরই দায়িত্ব নিতে হবে।
এক আত্মা দুই দেহে থাকে কিভাবে? আমার প্রশ্নে মাঠ কাঁপিয়ে হাসল মড়া। বলল, সে তোমার সমস্যা। আমাকে ত্যাগ করে আরেকজনের ভেতর সুরুৎ করে ঢুকে যাবার সময় মনে ছিল না তুমি দুই দেহের মালিক হতে যাচ্ছ!
এমন ভেজাল লাইফে প্রথম। কুল-কিনারা না পেয়ে একজন ফেরেস্তার সাথে দেখা করলাম। উনি সম্প্রতি আসমান থেকে বিতাড়িত হয়েছেন। বললেন, আসমানে গণ্ডগোল শুরু হইছে। এসব তারই আলামত।
মানে বুঝলাম না। আল্লাহ কি অন্য কোথাও চলে গেলেন নাকি! ফেরেস্তা যা শুনালেন তা ভয়াবহ। আল্লাহ মানুষকে নিয়ে আর ভাবছেন না। তিনি পুরো ফেডাপ। যা ইচ্ছা হোক মানুষের। তিনি আর কখনও এ ব্যাপারে নাক গলাবেন না।
কিন্তু মরে যাবার পরও দেহ বাঁচে কিভাবে? আর মরেই যদি গেলাম আরেক দেহে ঢুকলাম কিভাবে? মাথা চুলকিয়ে ফেরেস্তা বললেন, এইটা নতুন প্রবলেম আমার কোন আইডিয়া নাই।
রাতে স্বপ্ন দেখলাম। এক আজব মানুষ। বলছে, তুমি খুব লোভী! নিজ দেহ পছন্দ না হওয়ায় আত্মাহীন একটা দেহ পেয়ে পুটুস করে ঢুকে গেছ। কিন্তু আত্মাহীন দেহ হয় কিভাবে? পৃথিবীতে প্রতি দশ জনে একজনের কোন আত্মা নেই। তেমন দেহেই ঢুকেছ তুমি।
এখন কি করব আমি? দুই দেহ চালাব কিভাবে? একজন স্বামী যেভাবে দুই বউ চালায়। কিংবা একজন প্রেমিক যেভাবে দুইজন প্রেমিকা চালায় সেভাবে।
সকালে ঘুম ভাঙল প্রচণ্ড টেনশন নিয়ে। কাকে ছেড়ে কাকে রাখি এই চিন্তায় দুই দেহ ছেড়েই বাতাসে ভাসতে থাকলাম। একটা দমকা হাওয়া আমাকে দেহ দুটো থেকে দূরে কোথাও নিয়ে গেল।
দেহহীন আমি দেহ খুঁজতে খুঁজতে পার করে দিলাম তিনশো আশিটা পৃথিবী।